শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৫ পূর্বাহ্ন
আমিনুল হক সিপন ::
ফসল রক্ষায় বেড়িবাঁধ নির্মাণে বেলে মাটি ব্যবহারের নিয়ম না থাকলে ও জগন্নাথপুরে একটি হাওর রক্ষা বাঁধে বেলে মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে শস্য ভান্ডার খ্যাত মই হাওরের আগাম ফসলী বোরো জমি হুমকির মুখে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষকেরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। তাই দ্রুত এই বাঁধ ভেঙ্গে নতুন করে বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে দেখা যায়, জগন্নাথপুর উপজেলার নলুয়া হাওর পোল্ডার -০১) এর আওতায় মই হাওর এলাকার স্টিল ব্রীজের ডান দিকে ২০ নং পিআইসি’র অধীনে একটি হাওর রক্ষাবাঁধ কাজ চলছে। অথচ বাঁধ নির্মাণে বেলে মাটি ব্যবহার করে হচ্ছে। কোনো কোনো স্থানে নরম বেলে মাটিতে পা রাখলেই পা ধেবে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় নরম বেলে মাটির উপরে ঘাস লাগানোর কাজ ও চলছে। যা হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের নিয়ম পরিপন্থী।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন বলেন, হাওর রক্ষা বাঁধে নরম বেলে মাটি দিয়ে দায়সারাভাবে কাজ করা হচ্ছে। এভাবে বাঁধ নির্মাণ হলে; বর্ষায় মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হবে এ বাঁধ। । এতে কৃষকদের আশা্-আকাঙ্কার অন্যতম এ বাঁধটি হাওর রক্ষায় কোনো কাজে আসবে না।
অথচ পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষ উদাসীন। এমতাবস্থায় দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় স্থানীয় একজন জানান, হাওর রক্ষা বাঁধের নামে এ প্রকল্পে বেলে মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে। বর্ষাকালে এই বাঁধ কোনোভাবেই টিকবেনা। এতে একদিকে সরকারের বরাদ্দের টাকা ঘোলাজলে যাবে আর আরেকদিকে হাওরের কৃষকেরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ ইং অর্থ বছরের হাওর এলাকায় আগাম বন্যা প্রতিরোধ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় পানি উন্নয়ন বোর্ড, সুনামগঞ্জ পওর বিভাগ- ২ এর অধীনে জেলার অন্যতম নলুয়ার হাওর (পোল্ডার-০১ ) প্রকল্প বাঁধের কিঃমিঃ ৩২.০৫৬ হতে কিঃমিঃ ৩২.৩০৬ এর মধ্যবর্তী ০.২৫০ কিঃমি অংশ আগাম বন্যার কবল থেকে ফসল রক্ষায় হাওর মই হাওরে উক্ত ফসল রক্ষা বাঁধ চলমান।
১৩ লক্ষ ৯৭ হাজার ৪শত ২৭ টাকা ৩২ পয়সা বরাদ্দে উপজেলার ৫ নং হলদিপুর ইউনিয়নের অন্তর্ভূক্ত ৫ সদস্যের সমন্বয়ে এ পিআইসি’র কমিটি গঠন করা হয়। বিপ্লব চন্দ্র দাসকে সভাপতি ও মোঃ আব্দুল করিমকে সদস্য সচিব করে উক্ত কমিটি গঠিত হয়। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন- আখল মিয়া,বশির মিয়া ও লিকছন মিয়া।
জানা গেছে, নলুয়া নোয়াগাঁও নিবাসী প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি বিপ্লব চন্দ্র দাস, চিলাউড়া নয়াপুঞ্জি ও চিলাউড়া নয়াপুঞ্জি নিবাসী প্রকল্পের সদস্য সচিব আব্দুল করিম বাঁধের কাজ বালু মাটি দিয়ে দায়সারাভাবে কাজ করাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন মুঠোফোনে বলেন, বেলে মাটি দিয়ে বেড়িবাঁধাধের কাজ চলবে না। তিনি আর বলেন, বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি, প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা ও নেওয়া হবে।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান হাসান বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। কোনো গাফিলতি হলে যথাযত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও উপজেলা কমিটির সদস্য সচিব মুহাম্মদ হাসান গাজী বলেন, বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। কোনোভাবেই বেলে মাটি দিয়ে কাজ করা যাবেনা। এসময় তিনি নিজেও বলেন, মই হাওরের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ হচ্ছে ২০ নং পিআইসি।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি বিপ্লব দাস বলেন, হাওর রক্ষা বাধেঁর নির্ধারিত স্থানের আশপাশে অন্য মাটি না থাকায় বেলে মাটি ব্যবহার করতে হচ্ছে।
Leave a Reply